পুরাতন প্রেমিকের জ্যোৎস্নাপ্রেম
পাখি
একটা পাখির ফল খাওয়া মানে, অনেক পাখিরাই ফল খায়
একটা পাখির খড়কুটা ঠোঁটে ধরা মানে, পাখিরা ঘর বানায়
একটা পাখির উড়ে যাওয়া মানে, নানান পাখি উড়ে উড়ে যায়
একটা পাখির….
একটা পাখির ডেকে উঠা মানে, ডাকাডাকি’ও পাখিদেরই কাজ
একটা পাখির মউত হওয়া মানে, শুধু একটা পাখিই খাঁচাবন্দি হলো;
মরে গেলো আজ।
পুরাতন প্রেমিকের জ্যোৎস্নাপ্রেম
আম্মা রোদ ভালগার, দিনের মতো ফরসা দেহ তার । একখানা কালো বোরখা। গায়ে চাপালেই প্রকাশিত হয় দিনের ছলনা, রাত্রির জাগরণ । সূর্যরে আড়াল করে দাঁড়ানো নেকাবের ফাঁকে চন্দ্র ঝলমল । পূর্ণিমার মলমল কোমলতা নয় ; আব্বার পছন্দ তীক্ষ্ণ আলো এবং ধাঁধানো উজ্জ্বলতা। যিনি করেছেন রাত্রির সমস্ত বিহ্বল আঁধারের সৃজন।
দিনের মতো ফরসা দেহ তাঁর, অথচ অন্ধকার আম্মার পোষাক। রোদকে প্রসঙ্গত মকারি ভেবে আক্ষেপের পাশে রেখে গেছেন পুরাতন প্রেমিকের জ্যোৎস্নাপ্রেম।
পৃথিবীর আয়ুষ্কালের সঙ্গে জড়িত ডেলাইটদের মৃত্যু প্রসঙ্গে
বেড়ালের পায়চারির মতো গুমসুমপূর্ণ এমনসব শীতকালে সঙ্গত
পত্রঝড়ের বাহিরে কেবলই তোমাকে খোঁজবার তাৎপর্য বাকি থাকে।
মেঘ এবং পাখিদের কথা ভুলে যাওয়া আকাশে বলার মতো তুমুল
একটা বিভ্রান্ত ঘুড়ির একবার গোত্তা খেয়ে পুনরায় আত্মপ্রকাশে জানানো অস্বীকৃতির সঙ্গে আমাদের পরিচয় আছে, তাই তোমাকে দেয়াল ঘড়ির হাবভাব বোঝানোর দিনগুলি অন্যকিছু নয়, নিশ্চয়ই আগোয়ান বসন্তের নিকট দলবদ্ধ ইস্তফা দিতে পারে। একসময় মিঠা রঙমিশ্রিত বরফ দেখামাত্র উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর শিশুমুখ হয়ে উঠা প্রকৃতির আপাতত মরমর অনুষঙ্গ উদযাপন সূচক কোরাসের ভেতর আচমকা ঢুকে পড়া এলিজি যেনো, অথবা একটা ঋতুর সঙ্গে আরেকটা ঋতুর সম্পর্ক অনন্ত মৃত্যুর বার্তাবাহক,
আত্মপ্রকাশের উছিলা নিয়ে কতল করে চলেছে পৃথিবীর আয়ুষ্কালের
সঙ্গে জড়িত এইসমস্ত আশ্চর্য ডেলাইট।
এই শীতে কুর্মিটোলায় গেলে কিছু সারস দেখা যাবে কী?
চতুর কাঠবিড়ালিটা রাস্তার মাপজোখ শিখে নেবে, উধাও!
নিহত রেইনট্রিটাকে স’মিলের লোকজন এসে নিবে আর
আড্ডার ভেতর কখনো গ্রীষ্মের অনুতাপ কমাতে
বাতাসের প্রগলভতার দেখা পাওয়া স্পেসিফিক নেই
যেহেতু অণু আর পরমাণুর রঙ বাহারি ক্যান্টের ভেতর
ঢুকে যাওয়ার প্রতর্কজনিত চোখ দেখবে চেকপোস্টের
আর্মিটার ধীরে অসহনশীল হয়ে উঠা, ইটের ভাজ গুনে
উঠে যাওয়া ওয়ার্ড বয়দের ব্যস্ততা বাড়িয়ে সি এম এইচে
নতুন ডিপার্টমেন্টের করিডোরে হঠাৎ
চোখের উপর চোখ পড়তেই ছলাৎ শব্দে কিভাবে
জেগে উঠে যাচ্ছে রোগীদের
দল বদ্ধ হয়ে এখন শীতকাল,
কোথায় গেলে যে কিছু সারস দেখা যাবে অতিথি।
কুর্মিটোলায় নাকি ?
প্রিন্সেস অব ল্যুসিড ড্রিম
আমাদের সমস্ত ল্যুসিড ড্রিমিং। নিখিল পৃথিবীর সমস্ত পাখিদের ডানাগুলি কেটে নেবার পর আসমানের মেঘ ফালি করে শাই শাই উড়বার ইজারা পেয়েছে অজস্র যুদ্ধ বিমান । ধোয়ারঙ পরিবেশ হবে বলে অধিকতর ল্যুসিড। এমনও ধাতব, ঘন বরিষণে আগুনের হলকা লাগে গাছেদের মাছেদের গায়। পাতাগুলি ডানার মতো নাকি ডানার পাতার? পুড়ে যায় ; শুকায়ে গেলে সমুদ্র বলো সে উত্তাপের দায়ে । বলো প্রিন্সেস অব ড্রিম — তার মাছেরা কই যায়?
একটি মিথ্যা তুমি বলো
তোমার পার্সপেক্টিভে আমার অস্তিত্ব যেনো একটা মিথ। তাকে মিথ্যাও ধরে নিতে পারো। ধরতে ধরতে যেতো পারো আমাদের অলৌকিক মিলনে জন্ম নেয়া সেসব দৃশ্যদের গভীরে। আরও আরও গভীরে। যাবে? আমার সঙ্গে চলো। আর না গেলে তবে, সেই মিথ থেকে বের হয়ে আসতেই হয় যদি— অন্তত দৃশ্যগুলি নিয়ে ‘সত্যিই ছিলে’ এমন একটি মিথ্যা বলো।
বুলফাইট
রাত দুইটা সাতাশ, যখন আমি বিভ্রান্ত তুমি সাররিয়াল। যেনো দেখছি কুহেলীর অন্ধকার, প্লাইউডের আবরকে নিয়ে আসা স্প্যানিশ দুটি ষাঁড়ের বাসুকি আস্ফালন । জেগে আছে এই রাতে, লড়বে বলে, পৃথিবীর সর্বশেষ লড়াই। অদূরে গলায় রেড স্কার্ফ জড়ানো সেবাস্টিয়ান অ্যালকানো হাসছেন নাবিকের চোখে। তখন আমার আরও অধিক বিভ্রান্তি নিয়ে তুমি সাররিয়াল। দেখছি, চন্দ্রাহত নসিমনের পথ ধরে দৌড়ে যাচ্ছে পজেসড ইউনিকর্ন। পার্শ্ববর্তী নহরে দুলছে পাতি নৌকার বাদাম। শিঙের আঘাতে আঘাতে তার মর্মান্তিক হাল, অদূরে গলায় রেড স্কার্ফ জড়ানো সেবাস্টিয়ান অ্যালকানো, যার নাবিকের চোখ। এইসব দৃশ্যের সহায়তায় রাত আমাকে বিভ্রান্ত করে তুললে, তুমি হয়ে উঠছো সাররিয়াল। দেখতে হয়, এমন উচ্ছনে গিয়ে আর ফিরে না আসা শীতাক্রান্ত রাত, যখন তুমি গোসলে এসেছো । ক্ষারের সহায়তায় তুলে ফেলছো স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে উঠা দায়ের ক্ষত। তোমার শরীরে নেমে এসেছে ইভ। অদ্য রুয়েডোতে আবির্ভূত হয়েছেন মেটাডোর , লড়াই থেমে যাবে শীঘ্র , শুকোবে নহরের জল’ও । অদূরে গলায় রেড স্কার্ফ জড়ানো সেবাস্টিয়ান অ্যালকানো আর তার হাসিমুখ, তখনও রাত দুইটা সাতাশ, আমার সমস্ত বিভ্রান্তি নিয়ে তুমি সাররিয়াল। প্রতিকূলতাপূর্ণ হাসনাহেনার দীর্ঘতম প্ররোহ ক্যাচ করে নিচ্ছে পৃথিবীর অস্বচ্ছ ল্যান্ডস্কেপ । তোমার নগ্নতার পথ ধরে বাসুক ফিরে যাচ্ছে কৈলাশ। জিগজ্যাগ তার চলাচল। আর লাল এখন কেবলই গোলাপের রঙ। কম্পাসের কাঁটারা যথাস্থানে ফিরে এলেই ফ্রামে চড়ে আবিষ্কার করে নেবো গন্দমের গার্থ।
তখন রাত দুইটা, মিনিটের কাটা আটকে গেছে সাতাশে, অদূরে গলায় রেড স্কার্ফ জড়ানো সেবাস্টিয়ান অ্যালকানো, আমার আশ্চর্য বিভ্রান্তি দেখে হাসছেন নাবিকের চোখে, গলে যাচ্ছে তোমার সিনারিও, তুমি সাররিয়াল।