জল হিজল অনল – ৩য় পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশের পর হতে..
আজকের সকালটা অন্যরকম। মেঘের দখলদারিত্ব শেষ হয়েছে বোঝা যায়। কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন খন্ড খন্ড মেঘ বাতাসে ভাসছে। অথচ মনে হচ্ছে রোদের সঙ্গে হেরে যুদ্ধ বন্দি হয়ে এরা সূর্যের কারাগারে যাচ্ছে। যাক একনাগাড়ে এত বৃষ্টি ভাল লাগে না জ্যৈষ্ট মাস হয়েছে ত কি হয়েছে ! দিনরাত এভাবে বরিষণ করতে হবে। জানালাটা ঠেলে উপর দিকে তুলে এতক্ষণ গলাটা কচ্ছপের মত বের করে আকাশ দেখছিলাম কিন্তু মাথাটা জানালার ডালা ঠেকিয়ে রাখা কাঠিটার সাথে লেগে যাওয়ায় কাঠি ফসকে গেল, আর ডালাটা ধপাস করে মাথায় পড়ল। মাথাটা হাতের তালুতে ঘসতে ঘসতে বিছানা থেকে নেমে পড়লাম। যাই আগে মুখটা ধুই। তারপর হাগব। নইলেত আবার এখানে নিজের গু মাখানো পানিতে নিজের মুখ ধুতে হবে। চারদিকে থই থই পানি তার মাঝে ছোট ছোট দ্বীপের মত গ্রাম। বাড়ির সামনে জলের ঘাট তার পাশে চারটি বাঁশের মাথায় দাঁড়িয়ে আছে পরম সুখের ত্যাগ বিভাগ। উঠ আর বস তারপর লম্বালম্বা লাঠি বিস্কুটের মত ছেড়ে দাও গঙ্গায়। আবার সেখান থেকে নেমে ধৌত কার্য কর সেই গঙ্গায়, তারপর বাড়ি ফির সেই এক ঘটি গঙ্গা নিয়ে।
‘‘তোমাতে জনমি পূন তোমাতে সমাওত
সাগর লহরি সমানা।”
নতুন লুঙ্গি পড়তে শুরু করেছি কয়েক মাস হল। কোমরে গিট্টু দিতে পারি না, যে কোন সময় ফস করে খুলে যায়। আবার কোমরের চেয়ে গিট্টু মোটা হয়ে যায়। এ বড় যন্ত্রণার বিষয়। আমি এক হাতে লুঙ্গি আর হাতে মাথা ধরে মাঁচা ঘরের বারান্দায় বাবার সামনে দাড়াঁলাম। বাবা গুরুত্ব বুঝে আগে লুঙ্গির গিট্টু সমাধান দিলেন। তারপর মাথা ঘষে দিলেন। বাবা চুপড়া হাতে নিয়ে বললেন – আবু ল, খড়া ত মাছ কিন্যা আনিগা। আমি চালের খাপ থেকে বৈঠা হাতে নিয়ে বাবার পিছু ছুটলাম। ছোট নৌকা। হাট বাজার, কল থেকে পানি আনা, বিভিন্ন জাল থেকে মাছ আনা এসব নিত্য কাজের জন্য এমন একটি নৌকা না হলে হাওরে জীবন চলে না । প্রায় সব বাড়িতে এই রকম ছোট নৌকা এবং একটি বৈঠা থাকে । মাঝে মাঝে দাঁড়ও থাকে। বাবা বৈঠা মারছে আমি চুপড়া নিয়ে নৌকার মাঝে বসে আছি। রৌদ্র বেশ ঝরঝরে চেহারা নিয়ে ফুলে ফুলে উঠছে। বাবা হিজল গাছের ভিতর দিয়ে নৌকা বাইছেন তাই ছায়ায় ছায়ায় যাওয়া যাচ্ছে। সামনেই নদীর মুখ, ওখানে খড়া জাল ফেলে বসে আছে সমেন্দ্র জেঠা। জাল যখন উঠে জেঠা তখন নামে আর জাল যখন নামে জেঠা তখন উঠে। এ এক মজার খেলা ,জ্যাঠার সারাদিন উঠা আর নামা।
ধনদা, মাছ পড়ছেনি ?
পড়ছে কিছু গুড়া গাড়া , নিতে নি? বড়তা বেচিলাইছি। একটু উবা, দুইটা টান দিলাই। আবু আইছছ ? কিতা তরা ইস্কুল বন্দ নি ?
হ জেঠা, দেশে ত যুদ্ধ লাগছে। দেশ স্বাধীন না হইলে ইস্কুল খুলত না।
জ্যাঠা বলল- কেন যে এরা মারামারি করে। দেশ লইয়া মারামারি, রাজ্য লইয়া মারামারি, জমি লইয়া মারামারি। ভগবান দুইন্যাইডা বানাইছে খালি মারামারির লাইগ্যা।
হ জেঠা, এই তুমি যেমন মাছ মারতাছ !
হরে বাপ, এই পেডের লাই্গ্যা আমিও ত মারামারি করি। ভগবান এমন মেশিন ফিট কইরা দুইন্যাইত ছাড়ছে, মারামারি ছাড়া বাচনের বাও নাই। এইনে, এইবার পড়ছে।
জেঠা, সবডি দু রানী মাছ ।
না, কয়ডা কাজলিও আছে। নে তোর দাদু আর তুই ভাঁজা কইরা খাইছ।
জেঠা জালটাকে এমন ভাবে টান মারলেন, সবগুলো মাছ জাল থেকে যেন উড়ে এসে আমাদের নৌকায় পড়ল। একটা মাছ ও নদীর জলে পড়ল না। অথচ এই কাজটা জেঠার কাছে অত্যন্ত স্বাভাবিক। তিনি এটা অনায়াসেই করতে পারেন। নিয়মিত চর্চা মানুষের অনেক বিশেষ দক্ষতা বাড়িয়ে দেয়। মাছ নিয়ে ফিরতে ফিরতে আমি বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম, বাবা দাদু এখন রাইতে বাইর হয় না?
বাইরয়, হারা রাইত এই নাও লইয়া হাওরে পইড়া থাকে।
তাইলে তুমি মাছ কিনলা যে?
তোর দাদু নাও লইয়া রাইতে বাইরয় কিতা মাছ মারার লাইগ্যা নি? তাইন অন্য জগতের মানুষ । রাইতে বারয়া তার জগতের বন্ধুরারে খুজঁইন।
তোমার বাবা কি একটা ভূত?
তাইন ভূত না, ভূত খেদাইন্যা মানুষ।
তাইলে তুমি তোমার বাবার মত হইলা না কেনে ?
ভগবান ক্ষমতা না দিলে কেমনে হইতাম? তাইনত কম চেষ্টা করছইন না।
বাবা , আমি কার মত ? তোমার মত, না দাদুর মত ?
তুই আমরা কেউর মত না। তুই অনেক বড় হইবে , আমরারে উদ্ধার করবে। তোর দাদুর নাম মুইছ্যা ফালাইবে। আমারে মাইনষে উম্বার পুত না কইয়া, কইব ভবানন্দের বাপ। আমি হেই দিনডার কথা ভাইব্যা ওখন আনন্দ পাই। আমি হেই দিনডা দেইখ্যা মরবাম।
যতটা আনন্দ পাব বলে স্কুল থেকে লাফিয়ে বাড়ি এসে পড়েছিলাম ততটা আনন্দ এখন আর লাগছে না। নিপেন্দ্রর সঙ্গে আগের মত হতে পারি না। কিভাবে যেন ওর আর আমার মাঝে দূরত্ব বেড়ে গেছে।
এখানে এসে কেবলি হোস্টেলের কথা মনে পড়ছে। বাকী , মোস্তফা, শোভন এরাই যেন আমার একান্ত আপন। আসার সময় এটা বুঝিনি। এখন এখানে নিজের বাড়িতে আমাকে যেন মেহমান মেহমান লাগছে। কিভাবে যেন শেকড় ছিড়ে গেছে, সেই কাঁদার মধ্যে গড়াগড়ি, কার্তিক মাসের ভাটি পানিতে শালুক কুড়ানো, সারাদিন হাওরের কাঁদা পানিতে পড়ে থাকা। এসব কে স্মৃতি ভাবতেই এখন ভাল লাগছে। হোস্টেলে সন্ধ্যার পরে রুমের মেঝেতে বিছানায় বন্ধুরা মিলে যে ফাইটিং করতাম এখন তাই করতে ইচ্ছে করছে। বাকী, মোস্তফা যদি আজকের গয়নায় চলে আসত তাহলে যেন প্রাণ পেতাম, কিন্তু জানি আসবে না।
মনসা মন্ডপের বারান্দায় এই ভর দুপুরে উদাস বসে আছি। যেন কারো অপেক্ষা করছি সে আসলেই চলে যাবো। চোখের সামনে শরৎচন্দ্রের চরিত্রহীন উপন্যাসটা ধরে রেখেছি, আসলে কিন্তু পড়ছি না। এক বই কতবার পড়া যায়। তারপরও একটা বই হাতে থাকতে হবে। কেননা এগায়েঁ আমিই একমাত্র ছাত্র যে মনগঞ্জ ইস্কুলে পড়ে। আমি ত আর এ গাঁয়ের আট দশটা ছেলের মত মালকোচা মেরে তাস পেটাতে বসে যেতে পারি না। বা নৌকা নিয়ে গিয়ে ঘোড়ার জন্য ঘাস কেটেও আনতে পারি না। যেন আমি এগুলো কোনদিনও করিনি। মোহনগঞ্জ পাচার হবার পর থেকে এই নকল অভিনয়টা করতে করতে এটাই যেন আসল হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে সবচেয়ে বড় অবদান রুপু রানীর। কোন উপন্যাসের নায়কের মত হলে, ও আমাকে ভালবাসবে, মাথার মধ্যে সারাক্ষণ এই চিন্তা। এইখানে ছাত্রনাং অধ্যয়নং তপ হয়ে বসে থাকাটাও ওরই জন্য। আমি জানি এখন ও স্নান করতে আসবে। আমি যেখানটায় বসেছি ওখান থেকে তাকে ভালই দেখা যাবে। শেয়াল পন্ডিত সেজে বসে আছি।
ও দাদামণি তুমি ওখানও কিতা কর ? বইয়া থাকছ হুঃ , মনগঞ্জ যাইবা কবে ? এইবার কিতা ওক্কবারে আইছ , হেঃ হেঃ হেঃ ভালাই হইছে । ওতা লেখাপড়া দিয়া কিতা হইব ?
বইতাছছ কেরে ?
তোমার সামনে বই, তুমি হইলা আমরার শিক্ষিত বড় ভাই। তোমার কাছে কততা শিখনের আছে।
অত পাকনা পাকনা কথা কছ কেরে? বুড়া মানুষের মত, হের লাইগ্যা তরে সবাই মুরব্বী ডাকে।
আরে সবাই না খালি নির্মইল্যা পুংডায় ডাকে। এই পুংডার জ্বালায় কোনখানে শান্তি পাই না। খালি আমারে খোঁচায়। আমি মা কালীর কাছে বিচার দিয়া রাখছি। একদিন মা কালী ধইরা ঠিকই মুন্ডুডা খাইব।
মা কালী বিচার করব ?
হ করব ।
তাইলে মা কালীরে ক তোর অসুখটা কমায়া দিতে।
মা কমায়া দিবতো আস্তে আস্তে, এইডানু বড় অসুখ ।
প্রবীর নৌকার মধ্যে এইডা কেডারে?
প্রবীর অনুসন্ধানী দৃষ্টিতে তাকিয়ে হেঃ হেঃ করে হাততালি দিয়া বলতে লাগল গাজীকালু আইয়া পড়ছে, গাজী কালু আইয়া পড়ছে। আমি মনে মনে বললাম বাঁচা গেছে। এইবার প্রবীর কাজ পেয়ে গেছে। সারাপাড়া গাজী কালু নিয়ে ঘুরবে। প্রতি বাড়িতেই হাকঁডাক শুরু করে দিবে গাজী কালুকে বসতে দেবার জন্য। গাজী বেটা আজকের জন্য মাগনা এসিস্টেন্ট পেয়ে গেল। আর আমি ওর বকর বকর থেকে রক্ষা পেলাম। ওদিকে আমার রুপুরানীও এসে গেছে।
বাঃ কী চমৎকার !
‘‘ডাইনে রুপুরানীর স্নান বায়ে গাজীর গান.
আর মধ্যিখানে আমি নদ্যারচান। ”
গাজীকালু গানের সুর ছেড়ে দিয়েছে-
কালা পারলাম না তোমারে বানাইতে রতন ……
কালারে রতন বানাইতে না পারার আক্রোশ এখন গিয়ে পড়বে সমগ্র বাংলার নারী জাতির উপর। নারী শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়ে গাজী কালু একের পর এক করে বুঝাবে এগুলো পুরুষ এবং সংসারের জন্য কত ক্ষতিকর। আমারও একাদশে বৃহস্পতি। ডাইনে বায়ে মিলিয়ে নেবার আজই ত মোক্ষম সুযোগ।
গাজীকালু গাইছে ………..
“এক জাইত্যা নারী গো আছে পাড়ায় পাড়ায় যায়।
এর কথাডা হের ডাইন কইয়া কাইজ্যাডা লাগায়।
কালা পারলাম না তোমারে বানাইতে রতন……..”
নাঃ অসম্ভব রুপু এই চরিত্রের মানুষই না। এই যে সেদিন আমাকে ঝোপের মধ্যে দেখেছে, এটাও সে কারো
কাছে বলবে না। সে এক নিভৃতচারী আপনভোলা, পাড়াদুতিয়ালী তার স্বভাবের মধ্যেই নাই।
“থম থমায়া হাডে গো নারী পায়ের গোছা মোডা
এই নারীডা বিয়া করলে স্বামীডা হয় ফোডা”
নাঃ রুপুর পায়ের গোছা মোটা নয়, ঐ ত পায়ে সাবান মাখছে, কেমন সিনেমার পোস্টারের নায়িকার মত নূপুর পড়া লাবণ্যময় পা । সুতরাং আমার ফোডা হবার সম্ভাবনা নাই।
“গোবর ও ফালাইতে যে বা নারী করে গিন আর গিন
তার গোয়ালে গরু বাচুর বাচেঁ আড়াইদিন।”
দরকার কি গরু বাছুরের, আমি রুপুকে নিয়ে থাকব শহরে ঐ সব গরু বাছুরের ত ঐখানে প্রশ্নই আসে না। ওর কি সুন্দর চম্পাকলির মত হাতের আঙ্গুল, ঐ হাতে গোবর ফেলতে যাবে কোন দুঃখে। ঔ হাত ত কেবল আমার মাথায় বিলি কাটবার জন্যে।
“নতুন কাপড় পিন্দ্যা যে বা নারী আরে ফেরে চায়
তার স্বামীডা ফট্টাস কইরা একদিন মইরা যায়।”
ইস ! এত আমার স্বপ্ন, ও যদি এখন আমার মাথাটা কোলে নেয়, আমি উম্বা দাদুর দিব্যি দিয়ে বলছি এখনি মরতে পারি। কিন্তু আমি জানি সে সতী নারী। সতী নারীর স্বামী কখনও আগে মরে না।
“এক জাইত্যা নারীগো আছে পাঞ্জা ভরা চুল
ভাতে কাপড়ের অভাব হইলে গলায় বান্দে ঢোল।”
গাজী কালুর মাথা খারাপ ! রুপুর চুল অনেক। ও অনিন্দ্য সুন্দরী। ভগবান ওকে নিজ হাতে গড়েছেন বলে
কোন অপূর্ণতা রাখেনি। ও ভাতের জন্য গলায় ঢোল বাঁধবে, ওরকম ফকিন্নি স্বভাবের মেয়েই না। সে সারা জীবন না খেলেও কারো কাছে এক গন্ডুষ জলও চাইবে না।
ও নিব্ব্যংইশার ঘরের নিব্ব্যংইশা !
ফাডা বুকা বান্দর, বিদ্যান হইছছ। তোরে ফিরবার টাউনো পড়ায়। গোপালের ঘরে কংশ। বালা মাইনষের ঘরে কুবংইশ্যা। দাদাডার মত হাওরের ডাকাইত। আমি তরারে বুলাই, না চড়াই! আমারে খুচাছ কেনে? আমারে না খোঁচাইলে বইয়া খাওরার জাতের পেডের ভাত হজম হয় না? ঐ মেনা, ওখন রাউ করচ না কেরে?
“বালা মানুষ গঙ্গারাম পুটকির তলে পাকনা আম।”
“মাঐ চৈদ্দ”কইয়া ঘাড় গোরাছ, মনে করছছ আমি তোরে চিনতাম না। ও নিব্বংইশার নাতি তরার জাতেরে কেডায় না চিনে? তোরার পড়া লেখা হিকলে কী আর কাশী গেলেই কী । হকিন সাত আসমান উপরে উঠলেও নজর থাকে ফাগারো।
“মাঐ চৈদ্দর”যেমনি অকস্মাৎ আগমন ঘটেছিল আমার সম্মুখে তেমনি দ্রুত প্রস্থান হল। আমি কিছুই বুঝলম না। অথচ আমার চৌদ্দপুরুষ উদ্দার হল। মা সীতা গো ধরণীরে আরেকবার ফাঁক কর, এইবার আমি প্রবেশ করি। এটা ত্রয়োদশতম !
কে ? এ কোন অজানা শক্তি, আমাকে বারবার ওর সামনে এইভাবে নগ্নভাবে লাঞ্ছিত করে ? কে এই চাকরী নিয়েছে। আমার এইটুকু নীরব প্রেম তার সহ্য হয় না। এই চৌদ্দর ত এখানে আসবার কথা না, আমি কোথায় ছিলাম আর আমাকে কোথায় নামিয়ে দিয়ে গেল। রুপু স্নান সেরে চলে গেছে। এ কোন অজানা শক্তি আমাকে বার বার তার সামনে এভাবে উপস্থাপন করে। এই মাঐ চৈদ্দকে হয়ত আমিও একসময় খেপাতাম কিন্তু সে কম করে হলেও তিন বছর আগে । এই তিন বছরের মধ্যে বোধ হয় এই প্রথম দেখা অথচ একটা গালিও এতটুকু ইতস্তত করে দিল না। পরিষ্কার ধরে নিয়েছে যে আমিই তাকে “মাঐ চৈদ্দ”বলেছি। এবং বলে ঘাড় ঘুরিয়ে ফেলেছি।
আরে রাঢ়ি বৈতল, আমার ঘাড় কেন ঘুরে তার তুই কি বুঝিস? তার সামনে আমি কি হতে চাই আর কী হয়ে যাই। হ্যা ভাগ্য !
এখন মনে হলো তাহলে আমার এই এত বড় উপকারটা কে করল? কোন শালা নিশ্চই মন্দিরের ভিতর অথবা বাহিরে আছে। ঝাড়া দিয়ে উঠে ওকে খুজঁতে লাগলাম। দেখি মনসা মূর্তির পেছনে বসে কাঠের ঠাকুরের তিন ঠেইঙ্গা নাতি আকর্ণ হাসিতে ফেটে যাচেছ, এতক্ষণ শব্দ করে হাসেনি। এখন খেঁক শিয়ালের মত হাসছে। ওকে দৌঁড়ে ধরা সম্ভব না, যে কোন একদিকে গেলে অন্যদিকে পালাবে। অথচ তাকে এখন আমার ধরা চাই। আমি কীচক বধের শপথ নিয়ে ফেলেছি কিন্তু এখানেও ব্যর্থ হলাম। সারা জলটোপর প্রদক্ষিণ করেও ওকে ধরতে পারলাম না। শালা বান্দর তার স্বভাব মতই দৌঁড়াচ্ছিল থামবার কোন লক্ষণ ছিল না এমন কি পা পিছলেও পড়ল না।
(চলবে)