কে শেখালো এ পুঁজির খেলা
চাঁদের জমিনে কর্ষণের লোভ… চিরায়ত মানুষের ঘুমের শিয়রে
একটি লাল লজ্জাবতী
যাবো বহুদূর… শাবলের আঘাতে মাটির গভীরতা স্পর্শ করে
আদিম চাষি হয়ে রুয়ে দিবো সরল বৃক্ষ!
অবারিত প্রান্তরে দ্যাখো নেই কোনো বরফের আচ্ছাদন
শিউলির সকালে প্রিয়ার কোমল গ্রীবার লাল তিলকে স্পর্শ করে
এনে দিবো অমরত্বের বিলাস!
উজানের স্রোতে ভাসানো নৌকোর মাঝি আমার সুহৃদ বন্ধু
ধর্মের লেবাস না পরা-ধার্মিক আমার বন্ধু;
হিম সকালে রাস্তায় নেমে পড়া পথশিশু; গার্মেন্টস কর্মী, শ্রমজীবী
অনিরুদ্ধ স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখে…
আমার গৃহে তেলাপোকা, টিকটিকি, আর পিপীলিকার সহবাস
ফিরে যাই স্বগ্রামে-মাঠভর্তি মেহগনি বাগান- নেই কোনো ক্ষেতধান
রাস্তার ধূলো উঠে গেছে স্বর্গে
হলুদ বাড়ির কার্নিশে পোষা টিয়ার বিষণ্ন লাল ঠোঁট গণিকার
লিপস্টিক রাঙা ঠোঁটের মতো লাগে
একদা যাকে প্রেমিকা ভেবে বিস্তর চিঠি লিখে ভাসিয়েছি শান্ত দিঘির জলে
সে এখন রুগ্ন জননী; স্বামী অভাগা হৃৎপিন্ড!
মানুষের কোনো গল্প নেই- আছে মৃত ইতিহাস; ইতিহাসের নোনা পাথরে
মিথ্যেরা বাসা বেঁধেছে…যারা মিথ্যে বলে তাদের কদর অনেক…
জ্যান্ত ফসিলের কনফারেন্স কক্ষে
প্রধান অতিথি আজ সঙ্গমক্লান্ত পাঁড় মাতাল!
ধূমপায়ী কবি জানতে চেয়েছিলো-
ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলে, নদীভরাট, ব্যাংকলুট, ধর্ষণ
গণতন্ত্রের মৃত্যু, নির্দোষ জারজের কলঙ্কব্যথা কোন্ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?
মহোদয়গণ!
এই প্রান্তরে স্তনখোলা এক নারীর লাশ পাওয়া গেছে
তার ময়নাতদন্ত হবে…
আমি ক্ষমা চেয়ে অহেতুক বিরক্ত করবো না আজ আর কাউকে
পৃথিবী তার লজ্জা ঢাকতে চেয়েছিলো বসন্তের বিচিত্র ফুলে ফুলে;
বসন্তে কোনো গাছেই এবার ফুল ফোটেনি- রজঃস্বলার
রক্তে ছেয়ে গেছে অন্ধকার প্রান্তর!
তাহলে বলি-
যদি আমার শব্দভ্রুণে জন্ম নেয়
বেজন্মা কবিতা
তাকেও রেখো ভালো মহান রব
সে নিষ্পাপ-পাপঘ্ন
আমার কোনো তরিকা নেই- নেই সুফিগুরু
যদি পাই গুরুর সন্ধান
কবিতাকে সঁপে
নেবো ছুটি
অহমিকাহীন প্রস্তরখন্ড হয়ে পড়ে থাকবো নগরের ভাগাড়ে
চাই এক টুকরো প্রশ্রয় আশ্রয়!
এককাপ লাল চা- আর নয় কিছু।
দিবসের উজ্জ্বল আলোয় নিজেকে লুকিয়ে যারা দিব্যি চলে
তাদের মতো মাকড়সার জাল-বোনা কূটকৌশলী বিদ্যা অজ্ঞাত
এজমালি শয়নকক্ষে নিদ্রার আদলে যদি পারি ঘুমুতে-
কোলের শিশু মাতৃস্তন থেকে মুখ ফিরিয়ে
যেমন ঘুমায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ফেলে
তেমন;
তবে কেনো তিলাঞ্জলি?
রোদ আর মেঘের খেলায় তুমিই নিধান-
এইটুকু শান্ত্বনা নিয়ে ঘরে ফেরার
লজ্জা ঢাকতে চাই
খুব সখের একটি জিনিস কিনতে চাই
খুব সস্তা দামের একটি সখ
না, সবাইকে বলবো না
সব কথা বলতে নেই; গণতন্ত্রের উদারতা নষ্ট হলেই
নিজের অধিকারতন্ত্রও নষ্ট হবে- এমন ভাবি না;
যেখানে দাঁড়াই শুধু দেখি তুমুল প্রতিযোগিতা
শিশুর স্কুলে, আদালতের বারান্দায়
ঔষধের দোকানে
ডাক্তারের চেম্বারে
শিক্ষকের বাসগৃহে
বাণিজ্যে-ব্যবসায়
প্রেসপাড়ায়
বইয়ের দোকানে
পুষ্পবিতানে
সেক্সশপে
ফেরিঘাটে-বাসস্টপেজে
হাটে-মাঠে-ঘাটে-গঞ্জে;
সবজির আড়তে…
শোবিজে কবরে শ্মশানে
ব্যাংকে কর্পোরেট শুঁড়িখানায়- রাস্তায় রেস্তোরাঁয়
মহাসড়কে-অন্তর্জালে… অন্তরে অন্তরে
বিপুল বিমল অন্ধকার…সঘন অন্ধকার
মাটির ঘুঙুর পায়ে বিধবা ঘুঘু কেঁদে ফিরে
নৈঃশব্দ্যের দ্রোহী কান্না মিশে যায়
মাটির মমিতে ঘুমিয়ে পড়ে রাজশকুনেরা
যন্ত্রণাদগ্ধ মানুষ, ক্রীতদাসের কান্না ভুলে
অপরাধের অপঘাত ঘুমে আচ্ছন্ন
নিঝুম দুপুর…নিস্তব্ধ রাতের মতো;
অবিনাশী অভিলাষে হেঁটে চলে নগরের সমুদয় ইটপাথর
সুউচ্চ দালান আর দালাল…
সচকিত প্রশ্ন, কে শেখালো এ পুঁজির খেলা?